আবারও ক্যানসারে আক্রান্ত সাবিনা ইয়াসমিন

২০০৭ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। সেবার মরণঘাতী এই রোগকে জয় করে ফিরেছিলেন ভক্তদের মাঝে। ফের জানা গেছে, গুরুতর অসুস্থ তিনি। নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টারে চলছে তার চিকিৎসা।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এবার তিনি ওরাল ক্যান্সারের শিকার হয়েছেন। এরই মধ্যে একটি সার্জারি করা হয়েছে তার। দ্রুত দেওয়া হবে রেডিওথেরাপি। তারপর চিকিৎসকরা ভালো-মন্দ বলতে পারবেন। তবে কবে থেকে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ভর্তি তা জানাতে চাননি শিল্পীর মেয়ে বাঁধন।

পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে গানের ভুবনে বিচরণ করছেন সাবিনা ইয়াসমিন। বাংলাদেশের ইতিহাসে একমাত্র রুনা লায়লা ছাড়া তার সমকক্ষ হয়ে আর কেউ এত লম্বা সময় ধরে আধিপত্য বজায় রাখতে পারেননি। মরমী শিল্পী আব্দুল আলীম থেকে শুরু করে একালের উঠতি গায়কদের সঙ্গেও তিনি একের পর এক গান গেয়েছেন। সুযোগ পেয়েছেন উপমহাদেশের বরেণ্য সুরকার আর ডি বর্মণের সুরে গান গাওয়ার। উপমহাদেশের বিখ্যাত দুই কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমার ও মান্না দে’র সঙ্গেও গান গেয়েছেন সাবিনা ইয়াসমীন।

সাবিনা ইয়াসমিন শেষ প্লেব্যাক করেছেন প্রয়াত চিত্রনায়িকা ও নির্মাতা কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবির ‘দুটি চোখে ছিল কিছু নীরব কথা’ শিরোনামের একটি গানে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে গানটিতে কণ্ঠ দেন তিনি। এ ছাড়া কবরীর ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবির চারটি গানে সুরও দেন সাবিনা ইয়াসমীন। এর মাধ্যমে ক্যারিয়ারে প্রথমবার তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গ, ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে নিজেকে দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। এছাড়া জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন দুবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *