তাপমাত্রা কিছুটা কমে ফের দেশের চার জেলায় শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। তাপমাত্রা খুব বেশি না কমলেও কুয়াশার কারণে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমায় সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীত।
আগামী সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এদিন কিশোরগঞ্জের নিকলী এবং চুয়াডাঙ্গা পর্যবেক্ষণাগারে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পাবনার ঈশ্বরদীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তৃতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনজীবনে জবুথবু অবস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে রোগবালাইও বেড়েছে। শীতজনিত নানা রোগে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। শীত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন স্থানে অনেককে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
এদিন পূর্বাভাসে আবহাওয়ার সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, এদিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এদিনের পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, কিশোরগঞ্জ, পাবনা, দিনাজপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আজ সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠাণ্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।
ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র শীতের অনুভূতি রয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘন কুয়াশার কারণে উত্তর অঞ্চলে দিনেও রোদের দেখা মিলছে না। তাই দিনের বা সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান অনেকটাই কমে গেছে। উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ স্থানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও কম। তাই সেখানে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।
এদিকে, ঘন কুয়াশায় ব্যাঘাত ঘটছে জীবনযাত্রায়। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে হিমশীতল বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা। কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়া অনেকে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেরিয়েছেন নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। তারাও ঠান্ডার প্রকোপে খেতখামারে কাজ করতে পারছেন না। এ ছাড়া শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মিলছে না প্রয়োজনীয় গরম কাপড়। রাস্তায় চলা ভবঘুরে মানুষরাও পড়েছে শীত দুর্ভোগে।