সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীতে সমাবেশে ডাক দিয়েছে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ৩৬টি রাজনৈতিক দল। এ সমাবেশ থেকে সরকারকে পদত্যাগ করতে আল্টিমেটাম দেওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশ ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। এরইমধ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সরেজমিনে রাজধানীর পল্টন এলাকায় দেখা গেছে, বিএনপির সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই দলে দলে আসতে শুরু করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। উপস্থিতি বাড়ার শঙ্কা থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়ানো হচ্ছে পুলিশের জনবলও। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের আর্মড ভেহিক্যাল, এসকর্ট ভেহিক্যাল, সাঁজোয়া যান এপিসি, জলকামান।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত ও কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ৩৬ দলের সমাবেশ আজ। সেজন্য পরিস্থিতি অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জ অংশে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ। সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিন গিয়ে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক পয়েন্টে ২৫ জন, সাইনবোর্ড পয়েন্টে ৬০, সোনারগাঁওয়ের কাচঁপুর পয়েন্টে ৬০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকেই চেকপোস্টগুলোতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা যাত্রী ও চালকদের কাছে তাদের গন্তব্যস্থল সম্পর্কে জানতে চান। বাসে যাত্রীদের ব্যাগ, ব্যক্তিগত গাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে কোনো পয়েন্টেই তল্লাশি চালিয়ে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
অন্যদিকে রাজধানীর প্রবেশদ্বার আমিনবাজারে চেকপোস্ট বসিয়ে কঠোর তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা জেলা পুলিশ। সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজারের ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সামনে রাজধানীমুখী লেনে এই তল্লাশি করা হচ্ছে।
সকাল থেকে শুরু হওয়া এই চেকপোস্টে বাস, মাইক্রোবাসসহ সব ধরনের গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে।
সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘নিয়মিত চেকপোস্ট কার্যক্রমের অংশ হিসাবে আমাদের এই চেকপোস্ট ও তল্লাশি চলছে। তাছাড়াও যেহেতু রাজধানীতে দুটি দলের সমাবেশ রয়েছে কাজেই কেউ যেন ঢাকায় প্রবেশ করে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে কারণে তল্লাশি কার্যক্রমে জোর দেওয়া হয়েছে।’
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করতে গিয়ে কেউ যদি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে, হামলায় জড়ায়, বেআইনি কার্যকলাপ করলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে একইদিনে দুপুর আড়াইটায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। দেশের প্রধান দুই দলের সমাবেশ একইদিনে হওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা গেছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ইমতিয়াজ বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় যান চলাচল ধীরগতিতে চলছে। ফলে জায়গায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।