দেশের বাইরে থেকে অনেকেই এখন বাংলাদেশে টিকিৎসা নিতে আসছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম) অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করার পাশাপাশি সেবার মানও বেড়েছে। সেগুলোতে এখন আন্তর্জাতিক মানের সেবাও পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বিদেশিরাও এখন বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসছে।
জাহিদ মালেক বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন ৭০ হাজারের অধিক শয্যা, যা আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে ৪০ হাজারও ছিল না। শুধু শয্যাই বাড়াইনি, অক্সিজেন সাপ্লাইসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। যে কারণে সরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা এসেছে এবং তারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে।
আমরা চিকিৎসক সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে মেডিকেল কলেজগুলোতে সিট সংখ্যা বাড়িয়েছে। বর্তমানে মেডিকেল কলেজে সিট আছে ৫ হাজারের অধিক, যা পূর্বে ছিল ৩ হাজারের মতো। ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ৩৭টি মেডিকেল কলেজ করেছি।
তিনি বলেন, দেশে রোগবালাইয়ের পরিমাণ বেড়েছে। যে কারণে দ্বিগুণ-তিনগুণ শয্যা বাড়িয়েও হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না, রোগীদের ফ্লোরে থাকতে হয়। হাসপাতালে জায়গা না হওয়ার অন্যতম কারণ হলো হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ারও প্রবণতা বেড়েছে। অনেকে বলে সরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা হয় না, এটা ভুল কথা। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বিশ্বমানের।
মন্ত্রী বলেন, নতুন করে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিদেশিরাও আমাদের দেশে চিকিৎসা নিতে আসছে এবং তারা আমাদের প্রশংসা করছে।
এসময় জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশে আইসিডিডিআরবির ডেঙ্গু টিকার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিছু দেশে ডেঙ্গু টিকার ভ্যাকসিন তৈরিও হয়েছে, কিন্তু এখনো সেটা তেমনভাবে কার্যকর হয়নি। আমাদের দেশে যে টিকা তৈরি হয়েছে, তার দ্বিতীয় পর্যায়ে ট্রায়াল হয়েছে, আরও কয়েকটি পর্যায়ের ট্রায়াল বাকি আছে। যেখানে যেখানে অনুমোদন প্রয়োজন, সেই অনুমোদন সাপেক্ষে, টিকাটি যখন নিরাপদ প্রমাণিত হবে, তখন আমাদের দেশেও ডেঙ্গু টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, আইসিডিডিআরবির ডেঙ্গু টিকা তৈরির জন্য, যা কিছু প্রয়োজন, তারা চাইলে আমরা সাহায্য সহযোগিতা করবো। আলোচনার মাধ্যমে আমাদের কাছে সাহায্য চাইলে আমরা অবশ্যই দেবো। আমরা চাই একটি টিকা ডেভেলপ করুক ও সেই টিকা কার্যকর এবং নিরাপদ হোক যেন এ টিকা আমাদের দেশে দিতে পারি।
তিনি আরও বলেন, এক হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেছে। আমরা চাই না ডেঙ্গুর কারণে একটি মৃত্যুও হোক। ডেঙ্গু টিকার যে কার্যক্রম চলছে, সেটা চলমান থাকবে এবং আমাদের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যেন মশা নিয়ন্ত্রণে আসে, সারা বছর যেন এ কার্যক্রম চলমান থাকে। সবাই মিলে মাল্টিসেক্টরাল অ্যাপ্রোচ আমি নিতে বলেছি। যে যে মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা এখানে প্রয়োজন এবং ভূমিকা রাখতে পারবে তাদের সবাইকে নিয়ে আগামীতে এ কার্যক্রম আরও জোরদার হওয়া প্রয়োজন।