ঢালিউডের নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক মান্না। অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করে বাংলা চলচ্চিত্রকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। দেড় দশক হলো তিনি নেই। আজও অনুরাগীদের হৃদয়ের রাজত্বের ভার তার ওপরই আছে। মান্না ভক্তদের জন্য সুখবর হলো, মৃত্যুর ১৫ বছর পর সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে তার নতুন ছবি।
মান্না চলে যাওয়ার দেড় দেশক কেটে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি তার ‘জীবন যন্ত্রণা’ সিনেমাটি। একাধিকবার পরিকল্পনা করা হলেও পিছিয়ে গেছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রযোজনা সংস্থা। সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছবির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।
তিনি বলেন, ‘এটি মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা, সংগত কারণে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ দিনকে সামনে রেখেই মুক্তি দিতে চাই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সিনেমাটি।’
২০২১ সালের অক্টোবরে এটি সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরুর সঙ্গে ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন জাহিদ হোসেন।
সিনেমার মুক্তি এত বিলম্বে কেন– জানতে চাইলে প্রযোজক বলেন, ‘লীলামন্থন নাম দিয়ে সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম। ওই নামে ২০১১ সালে সেন্সরে জমা দিই। নাম নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে ছাড়পত্র পেতে দেরি হয়। নানা জটিলতায় এরপর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনার কারণেও মুক্তি পিছিয়ে যায়। আমি মনে করি, এই সময়ে তারকাবহুল সিনেমাটির আবেদনও অনেকটাই কমে গেছে। সিনেমাটি মুক্তি দিলেও হয়তো লোকসান হবে। এরপরও এটি মুক্তি দিতে চাই। মান্নাভক্ত ও সাধারণ দর্শক অপেক্ষায় আছেন সিনেমাটির জন্য।’
পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বেশ যত্ন নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছি। অনেক অপেক্ষার পর এটি মুক্তি পাবে ভেবে ভালো লাগছে। মান্না এ সিনেমার অন্তঃপ্রাণ। তাঁর শিডিউল পেয়েছিলাম ১০ দিনের। শেষ দৃশ্যটি তিনি করে যেতে পারেননি। এর আগেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় হন। পরে ডামি ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলায় তাঁর শহীদ হওয়ার দৃশ্যটি করেছি। সিনেমার ১২টি গল্পের নায়কই মান্না। তিনি একেবারে নতুনভাবে হাজির হবেন সিনেমায়, যা দেখলে দর্শক সহজেই বুঝতে পারবেন। আশা করছি দর্শক সিনেমাটি পছন্দ করবেন।’
২০০৬ সালে ‘লীলামন্থন’ নামে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। প্রায় তিন বছর সময় নিয়ে ২০০৮ সালে শেষ হয় এর দৃশ্য ধারণ। সিনেমার শেষ দৃশ্য ও ডাবিংয়ের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি মান্না। পরে আংশিক ডাবিং করেন অভিনয়শিল্পী রাতিন। সিনেমার বাকি কাজ গুছিয়ে ২০১১ সালে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়ার পর নামের কারণে তা আটকে থাকে। তখন নাম বদলানো না হলেও ১০ বছর পর নাম বদলে ছাড়পত্র পেল সিনেমাটি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একদল যৌ’নকর্মীর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’।
সিনেমায় মান্নার সহশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগর প্রমুখ।