নজর২৪, মংলা: মংলা পৌরসভার নারকেলতলা আবাসনে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করতেন কৌইন বিশ্বাস। কৌইন বিশ্বাসের মেয়েকে অন্তরা (২২) এর সাথে পরিচয় হয় আয়নাল নামের যুবকের সাথে। পরিচয় থেকে ভাললাগে আয়নাল কে। ভাল লাগা থেকে প্রেম।
আয়নালের সাথে একসময় নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে। দৈহিক সম্পর্কে এক পর্যায়ে মেয়েটি হয়ে যায় অন্তঃসত্ত্বা। তখন আয়নালকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু তাতে কোনভাবেই মন গলেনি আয়নালের। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে অসহায় মেয়েটির চারিদিকে নেমে আসে অন্ধকার। কোন উপায় না পেয়ে বিয়ের দাবিতে ছেলেটির বাড়িতে যান অন্তঃসত্ত্বা অন্তরা।
কিন্তু সেখান থেকেও শুনতে হয় হুমকি। কোন উপায় না পেয়ে আয়নারের বিরুদ্ধে মংলা থানায় বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করে অন্তরা। মামলা হওয়ার পর আয়নালকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। এভাবে কেটে যায় কিছু দিন।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রস্রব ব্যাথা দেখা দিলে মংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন অন্তঃসত্ত্বা। এমন দূর্দিনে কেউ তার পাশে নেই। মা- বাবা আর্থিকভাবে খুবই অসহায়। মেয়ের চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করার সামর্থও নেই তাদের।
এলাকার লোক মারফত বিষয়টি জানতে পারেন শেখ আঃ হাই ব্লাড ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও মংলা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম। তিনি চলে যান হাসপাতালে এবং ডাক্তাদের সাথে কথা বলে তার চিকিৎসারসহ নব জাতকের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেন।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) অন্তরার কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান। নবজাতক সন্তানকে কোলে নিয়ে শেখ কামরুজ্জামান জসিম ঘোষণা দেন নবজাতকের দায়িত্ব আমার।
এ ব্যাপারে আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম বলেন, আজ থেকে এই নবজাতক সন্তানের দায়িত্ব আমি নিলাম। তিনি নবজাতকে কোলে নিয়ে নাম দিলেন বিজয়। আগত নবজাতক বিজয়ের জন্য তিনি সকলের দোয়া চেয়েছেন।
মংলা থানা ও স্থানীয় সুত্র জানা যায়, অভাবের সংসার। দীর্ঘদিন যাবত অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও পানি বহন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল অসহায় কৌইন বিশ্বাসের মেয়ে অন্তরা। একই এলাকার স্থানীয় কোরবান মল্লিকের ছেলে আয়নাল মল্লিকের কু-নজরে পরে মেয়েটির উপরে। এক পর্যায় অন্তঃস্বত্তা হয় মেয়েটি।