শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ইন্টার মায়ামিকে শিরোপা জিতিয়ে মেসির ইতিহাস

যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে মেসি ম্যাজিক যেন থামছেই না। প্রত্যেক ম্যাচেই চোখ জুড়ানো পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা। যুক্তরাষ্টের মাটিতে নেমেই একের পর এক ম্যাচ রাঙিয়েছেন তিনি। প্রতি ম্যাচেই পেয়েছেন গোলের দেখা।

লিগস কাপের ফাইনালেও এর ব্যতিক্রম নয়। তার একমাত্র গোলেই নির্ধারিত সময়ে ১-১ সমতা থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এরপর ২২ পেনাল্টির রোমাঞ্চকর শুট-আউটে শেষ পর্যন্ত শিরোপা জেতে মেসির ইন্টার মায়ামি।

রোববার জিওডিস পার্কে লিগস কাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পেনাল্টি শুটআউটে নাসভিল এসসিকে ১০-৯ গোলে হারায় মায়ামি।

এই ম্যাচ নিয়ে ভক্তদের মাঝে তুমুল উন্মাদনা কাজ বিরাজ করছিল। কেননা আরেকটি শিরোপার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেসি। দলের আশা-ভরসার সবটুকু ছিল মেসিকে ঘিরে। জিওডিস পার্কের গ্যালারি ছেয়ে গিয়েছিল গোলাপি রংয়ের আলোয়। মেসিও ভক্তদের নিরাশ করলেন না।

ম্যাচে অবশ্য শুরু থেকেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে থাকে নাসভিলে। নিজেদের রক্ষণ আগলে রেখে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করতে থাকে দলটি। তাতে বেশ সফলও হচ্ছিলো তারা। কিন্তু প্রতিপক্ষ শিবিরে মেসি নামের এক জাদুকর আছেন, সেটা বোধহয় এক লহমার জন্য ভুলে গিয়েছিল ‘বয়েস ইন গোল্ড’রা। এই সুযোগেই ২৩ মিনিটের মাথায় দেখা গেল মেসির ভেলকি।

মাঠের ডানদিক ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মেসি। মায়ামির এক খেলোয়াড়ের ব্যর্থ চেষ্টায় বল চলে আসে সেন্টার বক্সের কাছে। দৌঁড়ে গিয়ে সেই বল আয়ত্তে নিয়ে কয়েক সেকেন্ড চোখধাঁধানো ড্রিবলিং। এরপর বক্সের কর্ণার থেকে বাম পায়ের আইকনিক শট এবং গোল। এ নিয়ে ৭ ম্যাচ ১০ গোল করে শীর্ষ গোলদাতা হিসেবেই লিগস কাপ শেষ করলেন বিশ্বকাপজয়ী তারকা।

গোল খেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে নাসভিলে। কিন্তু মায়ামির দৃঢ় রক্ষণের কাছে এসে খেই হারিয়ে ফেলতে থাকে তারা। মায়ামিও কয়েকটি অন্য টার্গেট শট নিয়ে ব্যর্থ হয়। প্রথমার্ধে কোনো দলই আর গোলের দেখা পায়নি। ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মেসির দল।

বিরতির পর গোল শোধে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করতে থাকে নাসভিলে। তাদের চেষ্টা অবশ্য বিফলে যায়নি। ম্যাচের ৫৭ মিনিটেই স্কোরলাইন ১-১ সমতা আনেন নাসভিলের ফাপা পিকাল্ট। স্যাম সুরিজের কর্নারে বক্সের ভেতর থেকে সহজ হেডে বল জালে জড়ান হাইতির উইঙ্গার।

এরপর দুই দলই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে। কিন্তু গোল নামের সোনারে হরিণের দেখা পায়নি আর কেউ। দুই দলই মিসের মহড়া দিয়েছে সমানতালে। তাতে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়েও কোনো ফলাফল আসেনি। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারেও গোল করেন মেসি। তবে দুই দলেরই একজন করে খেলোয়াড় পেনাল্টি মিস করলে ম্যাচ গড়ায় সাডেন ডেথে। সাডেন ডেথে নাসভিলের এলিয়ট প্যানিকো পেনল্টি মিস করে শিরোপা তুলে দেন মায়ামির হাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *