করের ১২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধ করলেন ড. ইউনূস

উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে দান করা অর্থের বিপরীতে তিন করবর্ষে আয়কর কর্তৃপক্ষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আরোপিত ‘দানকর’ এর ১২ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৬০৮ টাকা পরিশোধ করেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) তার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মো. রুহুল আমীন সরকার আয়কর অধ্যাদেশ ১৭৪ (২) ধারানুযায়ী উপকর কমিশনার সার্কেল ২৮৭ কর অঞ্চল-১৪ বিজয়নগর বরাবর এ অর্থ পরিশোধ করেন।

সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় এ টাকা পে-অর্ডারে জমা দেওয়া হয়েছে।

গত ২৩ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায় জানায়, এনবিআরের বোর্ড পাওনা বাবদ ১২ কোটি টাকা দানকর দিতেই হবে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে।

এর আগে গত ১৭ জুলাই প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ২৩ জুলাই শুনানির জন্য দিন রাখেন। এরও আগে ২১ জুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়।

মামলা থেকে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস। তার দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এ কর দাবি করতে পারে না।

এরপর ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর তার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর ২০১৫ সালে তিনি হাইকোর্টে তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।

মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মৃত্যু ও পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ চিন্তা করে নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে যে টাকা দান করেছেন, সেই দানের বিপরীতে এনবিআরের আরোপ করা দানকর বৈধ ঘোষণা করে গত ৩১ মে রায় দেন হাইকোর্ট।

৩১ মে রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন প্রতিষ্ঠানে ৭৭ কোটি টাকা দান করেছিলেন। তিনি বলছেন, এর বিপরীতে কর দিতে হবে না। আমরা বলেছি দিতে হবে এ কারণে এনবিআর তাকে নোটিশ দিয়েছিল। পরে তিনি হাইকোর্টে তিনটি রেফারেন্স মামলা করেছিলেন। হাইকোর্ট রেফারেন্সগুলো ঠিক বলেছেন। আবেদনগুলো খারিজ করে দিয়েছেন। এখন এনবিআরের দাবি করা কর দিতে হবে। এনবিআর ১৫ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছিল। ইতোমধ্যে তিনি তিন কোটি টাকার মতো দিয়েছেন। এখন বাকি ১২ কোটি টাকার বেশি কর পরিশোধ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *