নিজেদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক স্বীকার করে নিয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সিঙ্গাপুরের স্পিকার ত্যান চুয়ান জিন এবং এমপি চেন লি হুই।
সোমবার রাজধানী সিঙ্গাপুর সিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং।
এসময় তিনি বলেন, ‘আজ তারা দু’জনই আমার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’
দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে তারা একটি “অনুপযুক্ত সম্পর্কে” ছিল যা ফেব্রুয়ারিতে তাদের থামতে বলার পরেও অব্যাহত ছিল।
উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুর পার্লামেন্টের স্পিকার ত্যান চুয়ান জিন ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা। তিনি এবং এমপি চেন লি হুই উভয়েই ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) উচ্চ পর্যায়ের সদস্য। ২০২০ সাল থেকে তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতার শুরু।
কিন্তু দলের পক্ষ থেকে তাদেরকে এর আগে সতর্কবার্তা দিয়ে বলা হয়েছিল, যেহেতু ত্যান চুয়ান জিন বিবাহিত, তাই তাদের ঘনিষ্টতা দলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই তারা যেন নিজেদের সম্পর্ককে আর বাড়তে না দেন।
ত্যান চুয়ান জিন এবং চেন লি হুই দলের উচ্চ পর্যায়ের এই সিদ্ধান্ত সেই সময় মেনে নিলেও পরে সেখান থেকে সরে আসেন। সম্প্রতি পিএপির ভেতরে তাদের দুই জনের সম্পর্ক নিয়ে পিএপির বিরুদ্ধে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছিল।
গত সপ্তাহে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন সিঙ্গাপুরের পরিবহনমন্ত্রী এস. ঈশ্বরণ। পরিবহনক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গেপ্তার করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন ব্যুরো।
তার এই গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে সিঙ্গাপুরে প্রায় ৪০ বছর পর কোনো মন্ত্রী গ্রেপ্তার হলেন। সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে দেশটির মন্ত্রিসভার এক সদস্য দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
এস. ঈশ্বরণের গ্রেপ্তারের কিছু দিন আগে মন্ত্রিসভার অপর দুই জেষ্ঠ্য সদস্যদেরও বিরুদ্ধেও সরকারি পরিষেবা গ্রহণ করে বিল পরিশোধ না করার অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছিল দুর্নীতি দমন ব্যুরো। তবে তদন্তে তাদের ওঠা অভিযোগে পক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এশিয়া ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে ক্ষমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়, আবার বেশিরভাগক্ষেত্রে এসব দুর্নীতিকে ছাড় দেওয়াও নতুন কিছু নয়।
তবে সিঙ্গাপুর এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। দেশটি আক্ষরিক অর্থেই দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স মেনে চলে।
একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাসীন পিএপি যখন বিপর্যস্ত, সে সময় বিবাহিত স্পিকারের সঙ্গে এমপির প্রেমে দেশজুড়ে যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছিল, তার ইতি টানতে দলের নীতি নির্ধাকরদের নির্দেশে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন দু’জন।