ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ‘চিফ হিট অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বুশরা আফরিন। তিনি বাংলাদেশসহ পুরো এশিয়ায় প্রথম চিফ হিট অফিসার (সিএইচও)। আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যার্ডিয়ান আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের রেজিলিয়েন্স সেন্টার তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়েছে।
তিনি মূলত শহরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন বলে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে গেল কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা চলছে। সংবাদ প্রচার করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
এদিকে নগরীর উন্নয়নে ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডে বিভাজক নির্মাণে গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন সমাজের বিশিষ্টজনরা। তাদের মধ্যে একজন নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক মামুনুর রশিদ।
সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবে এ অভিনেতা গাছ কেটে নগর উন্নয়ন ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলেন। সেখানে মামুনুর রশিদ বলেন, খুবই হাসির কথা যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে একজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। চিফ হিট অফিসার নাকি ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হিট কমিয়ে দিবে। হিটটা কীভাবে কমাবেন? উনি কি মেঘ রচনা করবেন? প্রতিদিন বৃষ্টির ব্যবস্থা করবেন?
এ সময় পাশে থাকা একজন বলেন, গাছ লাগাবেন। তখন মামুনুর রশিদ বলেন, তার মানে পৃথিবীর সব জায়গায় শহর রক্ষার একটা বড় উপায় হচ্ছে গাছ লাগানো। মস্কো শহরকে উপর থেকে দেখা যায় না, এত গাছ। এমনকি আমরা যে কংক্রিট সিটি বলি নিউইয়র্ককে, সেই নিউইয়র্কেও প্রচুর পরিমাণ গাছ। সেন্ট্রাল পার্কের ভেতরে প্রবেশ করলে বের হওয়ার রাস্তা পাওয়া যায় না।
বিশিষ্ট্য এ নাট্যকার বলেন, একদিকে চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করা হলো। আরেকদিকে একাধারে গাছ নিধন হচ্ছে। এই ধানমন্ডি ছিল আমাদের স্বপ্নের এলাকা। এত পরিকল্পিত রাস্তাঘাট, এত বিকল্প সড়ক—এটা অন্য কোথাও ছিল না। একটা বড় লেক, লেকের দুপাশে বন-জঙ্গল, এগুলো আস্তে আস্তে গড়ে উঠেছিল। আমাদের স্বপ্ন ছিল যদি কখনো সাধ্য হয় তাহলে ধানমন্ডিতে একটা বাড়ি করব। বাড়ি করতে পারিনি, একটা ফ্ল্যাট কিনেছি ধানমন্ডিতে। তারপরই শুরু হলো আগ্রাসন।
তিনি বলেন, এটা একটা কমার্শিয়াল এরিয়ায় পরিণত হলো। তার বিরুদ্ধে আমরা মামলা করলাম, মামলায় জিতলাম। কিন্তু লাভ হলো না। ধানমন্ডি এলাকায় একটা জিনিস খুব গড়ে উঠেছে। ২৭ নম্বরের মাথা থেকে ২ নম্বর পর্যন্ত বড় বড় সাড়ে ১৩শ’ রেস্টুরেন্ট। আর ছোট রেস্টুরেন্ট যে কত, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। গুণেই শেষ করা যাবে না। তার মানে মানুষ শুধু খাবেই, আর কিছু করবে না?
এ অভিনেতা বলেন, এই যে, দৃষ্টিভঙ্গিগত সংকীর্ণতা, এই সংকীর্ণতার ফলাফল হচ্ছে আরে গাছ কাটলে কী হবে, নদী ভরাট করলে কী হবে, জলাশয় ভরাট করলে কী হবে, কেন শিশুদের জন্য একটা পার্ক প্রয়োজন? ৬০০ গাছ কেটে ফেলেছে। ২ লাখ গাছ নাকি রোপণ করবে। কোথায় করবে? আমরা ২ লাখ চাই না। আমরা চাই আর যেন একটি গাছও কাটা না হয়। যেখানে গাছ কাটা হবে, সেখানেই আমরা প্রতিরোধ করব।