স্টাফ রিপোটার- টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহি তাঁত শিল্প ব্যাপক হুমকির মুখে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিকেই তাঁতশিল্প একেবারে বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে তাঁতগুলো চালু করা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারছেনা তাঁতিরা।
তাঁতের কাপড় বর্তমানে একেবারেই বিক্রি হচ্ছেনা বলে জানান তাঁত মালিকরা। বিক্রি না থাকায় উৎপাদনেও লোকশান গুনতে হচ্ছে তাদের। এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিলুপ্ত হয়ে যাবে হাতে বুনা এ তাঁত শিল্প।
তাঁতবোর্ডের কর্মকর্তা মনে করেন, বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শুধু শাড়ী নয়, মানুষ যেসব কাপড় পরিধান করে সেগুলোই উৎপাদন করতে হবে। তবেই সম্ভব তাঁত শিল্পকে টিকিয়ে রাখা।
টাঙ্গাইল জেলা ব্র্যান্ডিং তাঁত শাড়ী। ঈদ, পূজাঁ এবং বৈশাখ এ তিনটি উৎসব তাঁত ব্যাবসায়ীদের সারা বছরের আয়ের উৎস। কিন্তু এ তিনটি সময় ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। ক্রেতা না থাকায় তাদের উৎপাদিত কাপড় শো-রুম কিংবা কারখানায়ই পড়ে আছে। করোনা পরিস্থিতির কারনে কাপড় উৎপাদন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় কিছুসংখ্যক তাঁতকল চালু করা সম্ভব হলেও, বেশির ভাগ কারখানা রয়েছে বন্ধ।
টাঙ্গাইলে প্রায় ২৫ হাজার তাঁত মালিক রয়েছেন। আর তাঁতশ্রমিক রয়েছে প্রায় লক্ষাধিক। এসব কারখানা বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তাঁত শ্রমিকরা ঝুকছে অন্য পেশায়।
জানা গেছে, কাপড়ের চাহিদা না থাকায় শাড়ী বুনতে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না তাঁত মালিকরা। এদিকে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন তাঁত শ্রমিকরা অন্য পেশায় চলে গেলে তাদের এ পেশায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না বলে মনে করেন তারা। এ ভাবে চললে একদিন হারিয়ে যেতে পারে টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্প। এ অবস্তায় সরকারি উদ্যোগই পারে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল তাঁত বোর্ডে লিয়াজে অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শুধু শাড়ী নয়, তার পাশাপাশি থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবিসহ সিল্কের প্রচলিত কাপড় তৈরি করে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হবে। দেশের এই অর্থমন্দাবস্থায় শুধু তাঁত শাড়ী তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ঠরা নয়, দরকার সরকারি পরিকল্পিত ব্যবসা পলিসি। তাহলেই টিকে থাকবে এই শিল্প। এমনটাই প্রত্যাশা জেলাবাসীর।