নজর২৪, বাগেরহাট- বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে রাতে ঘুমানোর সময় বাবা-মায়ের পাশ গায়েব হওয়া ১৭ দিনের শিশুটিকে হত্যা জড়িত থাকার অভিযোগে তার বাবা- চাচাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হলেন নিহত শিশু সোহানা আক্তারের বাবা সুজন খান, চাচা রিপন খান এবং তাদের ভগ্নিপতি হাসিব শেখ।
বুধবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর শিশুটি হত্যা ঘটনায় প্রাথমিক সম্পৃক্ততা পেয়ে পুলিশ তাদের রাতেই এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। তবে কী কারণে শিশুটিকে তারা হত্যা করেছে তা এখনও স্পষ্ট করেনি পুলিশ। আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
উল্লেখ্য, রোববার রাত ১১টার দিকে মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের মৎস্যজীবী সুজন খান ও তার স্ত্রী শান্তা আক্তার ১৭ দিন বয়সী শিশু মেয়ে সানজিদাকে তাদের দুজনের মাঝখানে শুইয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত ২টার দিকে তাদের ঘুম ভাঙলে দেখেন শিশুটি বিছানায় নেই। তার বালিশটি খাটের নিচে পড়ে আছে এবং ঘরের দরজাগুলো খোলা। একমাত্র নবজাতক সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন শিশুটির মা শান্তা আক্তার।
এ ঘটনায় সোমবার রাতে চুরি যাওয়া শিশুটির দাদা মো. আলী হোসেন খান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক কলহের কারণে ১৭ দিনের শিশু সানজিদা চুরি হয়ে থাকতে পারে বলে শিশুটির বাবা সুজন খান দাবি করেন।
শিশু সানজিদাকে উদ্ধারে থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও পিবিআইয়ের পৃথক দুটি টিম মাঠে কাজ করে। বুধবার ফজরের পর স্থানীয়রা বাড়ির পুকুরে শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
মোরেলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম সকালে এই প্রতিবেদককে বলেন, ওই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ তৎপর ছিল। শিশু সোহানাকে চুরির পর পুলিশ তাকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।
বুধবার সকালে পুকুর থেকে ১৭ দিনের শিশু সোহানার মরদেহ উদ্ধারের পর দুপুরে সন্দেহভাজন হিসেবে শিশুটির বাবা সুজন খান, চাচা রিপন খান এবং তাদের ভগ্নিপতি হাসিব শেখকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়।
ওসি বলেন, ‘দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তারা শিশু সোহানা হত্যার ঘটনায় জড়িত রয়েছে। তাই আমরা এই তিনজনকে শিশু হত্যার ঘটনায় রাতে গ্রেপ্তার দেখিয়েছি।’ আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর শিশু সোহানা হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।