নজর২৪ ডেস্ক- গত ৩০ জুন বাগেরহাটের কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা টেস্টের জন্য নমুনা দিয়েছিলেন ৭০ বছরের আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রী। তাদের মধ্যে আলতাফ হোসেন ফলাফল পেলেন ৭১ দিন পর। তাতে লেখা পজিটিভ। আলতাফ হোসেন ৭১ দিন পর ফলাফল পেলেও ওই একই দিনে নমুনা জমা দেওয়া আরও চার জন এখনও ফলাফল পাননি।
আলতাফ হোসেনের ছেলে গণমাধ্যমকর্মী আহরার হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘সরকারি হাসপাতালে দেওয়া আব্বার করোনা টেস্টের রিপোর্ট অবশেষে আজ পেলাম। বেশি দিন লাগেনি, মাত্র ৭১ দিন লেগেছে। আলহামদুলিল্লাহ। আব্বা করোনা পজিটিভ এসেছেন।’
ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, জুন মাসের শেষদিকে আলতাফ হোসেন অসুস্থ ছিলেন। করোনাভাইরাসের আক্রান্তের লক্ষণও ছিল। ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো জ্বরে অসুস্থ তিনি এবং তার স্ত্রী শেষে গত ৩০ জুন করোনার পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। দুই/তিন পর অবস্থা খুব খারাপ হলে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ঢাকায় আসার পরদিনই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় এনে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরদিন রাতেই তার ফলাফল হাতে আসে। তাতে আলতাফ হোসেন করোনা পজিটিভ ছিলেন। তারপর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, যদিও ইতোমধ্যে পরিবারের কয়েকজন সদস্য আক্রান্ত হন।
৩০ জুন নমুনা দেওয়া বাকি চার জনের মধ্যে একজন বলেন, কচুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেওয়া নমুনা পরীক্ষার কথা ভুলেই যাই। তবে কয়েকদিন আগে একদিন খবর নিয়েছিলাম যে পরীক্ষার ফলাফল অন্যরা পেয়েছেন কিনা। সেখান থেকে খবর আসে, সেদিন যারা নমুনা দিয়েছেন তারা কেউ ফলাফল পাননি।
৭১ দিন পর ফলাফল পাওয়া আলতাফ হোসেনের নমুনা পরীক্ষাটি করা হয়েছে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে। ৭১ দিন পর কীভাবে ফলাফল দেওয়া হলো জানতে চাইলে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান তুষার বলেন, নিয়মিতভাবে বাগেরহাট থেকে কোনও স্যাম্পল পাঠায় না। বাগেরহাটের স্যাম্পল যায় খুলনায়। খুলনা থেকে দু-একবার পরীক্ষা করানো হয়েছে। আর ওখানে ব্যাকলগ হয়ে গেলে সেটা আমাদের কাছে আসে। তবে এটা অনেক দিন আগের বিষয়। সব রেকর্ড না দেখে মন্তব্য দিতে পারবো না।
এদিকে বাগেরহাটের নমুনা ঢাকায় আসে কিনা জানতে চাইরে জেলার সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ূন কবীর বলেন, করোনার শুরু থেকেই এ ধরনের ঝামেলা হয়ে যাচ্ছে। নিকটতম ল্যাব হচ্ছে খুলনাতে, আবার খুলনাতে যখন ওভারলোড হয়ে যায় তখন সেটা ঢাকায় পাঠাই। আবার ঢাকাতে যেহেতু অনেক জায়গা থেকে নমুনা যায়, তাই পরীক্ষা হওয়ার পরেও রিপোর্ট দিতে দেরি হয়। আমরা নিজেরাও চাই নমুনা পরীক্ষার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফলাফল দিতে। কারণ, তাতে পজিটিভ-নেগেটিভ দুটোই অনেক বড় বিষয়। সে অনুযায়ী তাকে চলতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু এ সমস্যাগুলো হচ্ছেই।