খালেদা জিয়ার সঙ্গে যুবলীগ নেত্রীর ছবি ভাইরাল

নজর২৪ ডেস্ক- গত শনিবার ঘোষণা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি। ২০১ সদস্যের এই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা)। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার পরই তাঁর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে অনেকেই নানা মন্তব্য করছেন।

 

মৌসুমী ফাতেমা যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাহী সদস্য হয়েছেন। গতকাল রোববার ফেসবুকে যে ছবিগুলো শেয়ার করা হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে সোফায় বসেন তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন মৌসুমী।

 

একটি ছবিতে খালেদা জিয়া সোফায় বসা আর মৌসুমী মেঝেতে বসে সোফার হাতলে হাত রেখেছেন। ছবিগুলো বিএনপি চেয়ারপারসনের তৎকালীন সেনানিবাসের বাসায় তোলা। ফেসবুকে ঘুরতে থাকা এই ছবিতে এমন মন্তব্যও এসেছে, মৌসুমী ফাতেমা কীভাবে যুবলীগে পদ পেলেন। কেউ কেউ মৌসুমী ও তাঁর পরিবারকে বিএনপির সমর্থক ও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও উল্লেখ করেছেন। অবশ্য খোঁজ নিয়ে মৌসুমী বা তাঁর পরিবার বিএনপির ঘনিষ্ঠ বলে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাঁর বাবা শিক্ষকতা করতেন। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। এক ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আরেক ভাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। আরেক ভাই থাকেন গ্রামে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে।

 

গ্রামে থাকা এই ভাইকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে বলা হচ্ছে। অবশ্য এখন সেখানে বিএনপির কোনো কমিটি নেই। ফলে তিনি এখন কোনো পদেও নেই।

 

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে মৌসুমী ফাতেমার যোগাযোগ আছে, এমন কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি যুবলীগের কেউ। এক নেতার ধারণা, যে ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছে, সেই ছবিগুলো পারিবারিক সম্পর্কের কারণেই তোলা। ছবিগুলো কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের নয়। ফাতেমা ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তার বিএনপির সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ ওই নেতার কাছে।

 

ছবি ভাইরাল ও তা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার বিষয়ে মৌসুমী ফাতেমা বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিরক্ত। তবে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, তুমি মেধাবী। রাজনীতিতে ভালো করবে। এগুলোকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। আমাকে তারা যুবলীগের জন্য, আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করতে বলেছেন।’

 

ফাতেমা আরও বলেন, ‘যে সময়ের ছবি নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, সেই সময়ে কিন্তু তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও আমার ছবি ছিল। এসএসএফের কিছু অনুষ্ঠান হতো। ফ্যামিলি প্রোগ্রামও হতো। সেখানে ভাইয়ের সঙ্গে গিয়েছি। এটাকে কেন রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা, সেটা বুঝলাম না।’

 

যুবলীগের এ নেত্রী জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি জাতীয় পর্যায়ে নানা পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৮৯-৯০ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন। বর্তমান বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গেও তার ছবি আছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও ছবি আছে। আর যে ছবিটির কথা বলা হচ্ছে সেটি ১৮-১৯ বছর আগে তোলা। এর সঙ্গে তিনি বা তার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এর কোনো ভিত্তি নেই।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চৌধুরী মৌসুমী ফাতেমা (কবিতা)। জানা গেছে, ২০০০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তার এক ভাই। ২০০১ সালে নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শাসনামলেও তার ওই ভাই এসএসএফ’র দায়িত্বে ছিলেন। ছবিগুলো ওই সময় তোলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *