‘কোন রোহিঙ্গাকেই পাসপোর্ট দিবে না বাংলাদেশ’

নজর২৪ ডেস্ক- সৌদি আরবে অবস্থানরত ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বৈধতা দেয়া হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদেরও বৈধতা দিতে হবে এমন আশংকার কথা জানিয়ে শক্ত অবস্থান নেয়ার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। এদিকে কোন রোহিঙ্গাকেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

 

মিয়ানমার সেনাবাহিনী যুগের পর যুগ তাদেরই নাগরিক রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে অমানবিক নির্যাতন চালালে সীমান্ত পার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে নানা দেশে পালিয়ে যায় রোহিঙ্গারা। তার মধ্যে ১৯৭৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

 

শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দুবাই, থাইল্যান্ড, ইন্দোশিয়াসহ নানা দেশে অবস্থান করছে আরও ৯ লাখের মতো রোহিঙ্গা। কিন্তু হঠাৎ করে সৌদি আরবে অবস্থানরত ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিতে চাপ দিচ্ছে দেশটি। এটি অনৈতিক ও নিন্দীয় বলে মনে করছেন সচেতনমহল।

 

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আয়াছুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশ সরকার এমনিতে চাপের মুখে পড়েছেন। ঠিক সেসময়ে ভিনদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের আমাদের দেশে চাপিয়ে দেয়ার জন্য যে ধরনের অপচেষ্টা চলছে, আমরা চাই না সৌদি সরকার এটা করুক।

 

আমরা কক্সবাজারবাসী সমন্বয়ক কলিম উল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশকে যে ধরনের চাপ দিচ্ছে সৌদি আরব, সেই অধিকার সৌদি আরবের নেই।

 

সচেতন মহলের অভিযোগ, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের উপর অন্যায়ভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধুরী বলেন, কোন রোহিঙ্গাকেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়া হবে না।

 

সৌদি আরবে অবস্থানরত ৫৪ হাজার রোহিঙ্গার বিষয়টি নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর জরুরি বৈঠকে বসবেন দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

এদিকে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, সৌদিতে থাকা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারে চাপ রয়েছে। তবে চাপ থাকলেও পুরনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট না থাকলে বা বাংলাদেশে কখনো থাকার প্রমাণ দেখাতে না পারলে কাউকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, আশির দশকে অনেক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিল সৌদি আরব। এই রোহিঙ্গাদের ছেলে-মেয়েরা সেখানেই জন্ম নিয়েছে এবং বেড়ে উঠেছে। তারা বাংলাও জানে না। বাংলাদেশের সঙ্গে তারা সম্পর্কিত নয়। এখন সৌদি সরকার তাদের জন্য পাসপোর্ট দিতে বলছে। কারণ সৌদি আরব তার দেশে কোনো ‘রাষ্ট্রহীন’ লোক রাখতে চায় না।

 

ড. মোমেন আরও জানান, সৌদি আরবের জেলে ৪৬২ জন রোহিঙ্গা আছেন। মিশন থেকে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ৭০-৮০ জনের বাংলাদেশের পাসপোর্ট আছে। কেবল এই পাসপোর্টধারীদের ফেরত আনা যেতে পারে।

পাঠকপ্রিয়

এ সম্পর্কিত আরও